নদীমাতৃক বাংলাদেশে এমন কোনো জেলা-উপজেলা নেই যেখানে নদ-নদী নেই। নদীমাতৃক দেশের মানুষ হিসেবে সবাই নদীতে নেমে গোসল করতে ভালোবাসে। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এমন কিছু নদী রয়েছে যেখানে কেউ গোসল করতে নামলেই নিশ্চিত মৃত্যু। আসুন জেনেই নেই সেসব বিপজ্জনক পাঁচটি নদীর নাম।

হোয়ারফে, ইংল্যান্ড

এ যেন এক প্রাকৃতিক ফাঁদ! দেখতে যতটা সুন্দর, ততটাই বিপজ্জনক এই নদী। শোনা যায়, ইয়র্কশায়ারের কাছে এই নদীতে গোসল করা তো দূরের কথা, কেউ পড়ে গেলে নাকি আর ফিরে আসে না! কিন্তু কেন, তা আজও এক রহস্য। কারও কারও মতে এই নদীগর্ভে রয়েছে অসংখ্য প্রাকৃতিক সুড়ঙ্গ। সেই সুড়ঙ্গেই নাকি তলিয়ে যায় মানুষ। হারিয়ে যায় অতল গহব্বরে।

শানায়-টিমপিশকা, পেরু

পৃথিবীর একমাত্র ‘ফুটন্ত নদী’ হিসেবে পরিচিত পেরুর এই ভয়ঙ্কর নদী। সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীর পানি এতটাই গরম যে, কোনও মানুষ এই পানিতে পড়ে গেলে তার পক্ষে বেঁচে ফেরা অসম্ভব। নদীটির ন্যূনতম উষ্ণতা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কোথাও কোথাও এই উষ্ণতা পৌঁছে যায় ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে! যেখানে গরমে ফুটতে শুরু করে পানি। পড়ার সাথে সাথেই হয়ে যাবেন। বেঁচে ফেরার কোনো উপায় নেই বললেই চলে।

কঙ্গো, আফ্রিকা

পৃথিবীর গভীরতম কঙ্গো নদীতে নামলেই প্রাণ নিয়ে ফেরা মুশকিল। এই নদীর গভীরতা এতই যে, এর তলদেশে আলো পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না। তাই নদীর তলায় ঠিক কী রয়েছে, তা নিয়ে রহস্যের অন্ত নেই। কোথাও কোথাও এই নদীর গভীরতা ৭০০ ফুটেরও বেশি। কোনোভাবে সেখানে পড়ে গেলে হয়ে যাবেন নিরুদ্দেশ।

মিসিসিপি, উত্তর আমেরিকা

উত্তর আমেরিকার দীর্ঘতম নদীর নাম মিসিসিপি। দেখতে শান্ত মনে হলেও এই নদীটি প্রতি বছর কেড়ে নেয় অসংখ্য মানুষের প্রাণ। মিসিসিপি নদী ‘বুল শার্ক’ ও ‘পাইক’ নামক এক প্রজাতির মাছের বাসস্থান। এই মাছগুলোর আক্রমণে প্রতি বছর এখানে বহু মানুষ মারা যায়। এছাড়া এই নদীতে রয়েছে অসংখ্য ঘূর্ণি, যা খালি চোখে দেখতে পাওয়া বেশ কঠিন। গোপন ফাঁদের অতো এগুলো মানুষকে ডুবিয়ে দেয়। ফলে এখানে নামলেই নিশ্চিত মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

নীল নদ, আফ্রিকা

নীল নদ কেবল মিশরে নয়, আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মোট ১১টি দেশের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে এ নদ। নীল নদেও লুকিয়ে আছে অসংখ্য বিপদ। এই নদজুড়ে রয়েছে বিপদজনক সব কুমিরের বসবাস। প্রতি বছর নীল নদে গড়ে ২০০ জন মানুষ মারা যায় কুমিরের আক্রমণে। এছাড়া নীল নদের পানিতে রয়েছে বেশ কিছু ভয়ংকর জীবাণুরও। আর তাই স্থানীয় লোকজন এই নদীর বেশ কিছু অংশে গোসল করে না। গোসরে নামলেই অবধারিত মৃত্যু।

সূত্র: আনন্দবাজার